ফলন ও দাম ভালো পেয়ে হাসি ফুটেছে বগুড়ার শিবগঞ্জের পাট চাষিদের মুখে। মরিচ, আলু ফুলকপিসহ বেশ কিছু ফসলে লাভের মুখ না দেখলেও এবার কৃষকদের স্বপ্নপূরণ করেছে দেশের এক সময়ের প্রধান অর্থকরী ফসল পাট। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উপজেলায় পাটের ভালো ফলন হয়েছে।
উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাইফুর রহমান জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ২০০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হলেও তার চেয়ে বেশি জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে ।
সরজমিনে উপজেলার মোকামতলা দেউলী, সৈয়দপুর, কিচক, মাঝিহট্ট, গুজিয়া এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অনেক চাষি ভেঁজানো কাটা পাট গাছ থেকে আঁশ ছাড়াচ্ছেন। আবার অনেকেই আঁশ শুকিয়ে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করছেন পাট।
বাজার গুলোতেও জমে উঠেছে পাটের বেচাকেনা। ভালো দাম পাবার আশায় দূরের গ্রাম থেকে বোঝাই অটোভ্যানে করে প্রক্রিয়াজাত করা পাট নিয়ে আসছেন বাজারে।
উপজেলার মোকামতলা ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের পাট চাষি সেকেন্দার আলী(৫৫) জানান, পাট চাষ করে তিন মাসের মধ্য ঘরে তোলা যায়। প্রতি বিঘা জমিতে পাট চাষ করতে ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। বিঘা প্রতি জমিতে ৮থেকে ১০ মণ পাট উৎপাদন হয়। এবার বাজারে মান ভেদে পাট বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। পাটের ভালো ফলন ও বাজারে ভালো দাম পেয়ে খুশি তারা।
উপজেলার রহবল পশ্চিমপাড়া এলাকার পাট চাষি শফিকুল ইসলাম বলেন, সোয়া ২ বিঘা জমিতে পাট চাষ করতে খরচ করেছি ১৫ হাজার টাকা। ওই জমিতে ১৮ মণ পাট হয়েছে। প্রতি মণ ২ হাজার ৯০০ টাকা দরে বিক্রি করেছি এতে আমার খরচ বাদে ৩৭ হাজার ২০০ টাকা লাভ হয়েছে।
রোদে পাট শুকাচ্ছিলেন একই এলাকার পাট চাষি বেলায়েত আলী। তার সাথে কথা বললে তিনি জানান, আলু, মরিচ ও ফুলকপি চাষে এবার লাভের মুখ দেখতে পাইনি। তবে পাটের বাজার ভালো হওয়ায় ক্ষতি পুশিয়ে উঠবে বলে মনে করছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মুজাহিদ সরকার তৃণমূল খবরকে জানান, লাভজনক ফসল হওয়ায় চাষিরা এখন পাট চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। এছাড়া এ এলাকার কৃষকদের পাটচাষে আরো উদ্বুদ্ধ করতে সরকারের পক্ষ থেকে কৃষি অনুদান প্রদানের পরিকল্পনা রয়েছে।