মত প্রকাশের স্বাধীনতা আল্লাহ প্রদত্ত, কিন্তু বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকার মত প্রকাশ ও ভোটের অধিকার হরণ করেছে। ভোট দেওয়ার মধ্য দিয়েও মানুষ এক ধরণের মত প্রকাশ করে। অতএব ভোটাধিকারও আল্লাহ প্রদত্ত অধিকার। তিনি বলেন, এখন দেশে আওয়ামী লীগ, বিএনপি বা জামায়াতে ইসলামীপন্থী সাংবাদিক হিসেবে বিভাজন নেই। আছে ফ্যাসিবাদের পক্ষের শক্তি ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তি। জড়তা কাটিয়ে সাহসের সাথে ফ্যাসীবাদী শাসনের পতন আন্দোলন জোরদার করতে হবে।‘বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারের ওপর আরোপিত অসাংবিধানিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে। মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা আল্লাহ প্রদত্ত, কিন্তু বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকার মত প্রকাশ ও ভোটের অধিকার হরণ করেছে। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে, তখনই গণমাধ্যমের টুটি চেপে ধরেছে। দাগী খুনি, সন্ত্রাসীদের জামিন হচ্ছে প্রতিদিন, অথচ শীর্ষ সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীর জামিন নিয়ে টালবাহান চলছে’।
সভাপতির বক্তব্য রাখছেন সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়ার সভাপতি মীর্জা সেলিম রেজা
সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়ার আয়োজনে সাংবাদিক সমাবেশে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন বিএফইউজে’র নেতৃবৃন্দ।
এসময় তারা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যম বিরোধী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অবিলম্বে বাতিল ও কারাবন্দী বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন বিএফইউজে’র সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর মুক্তি জোরালে দাবি করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক এবং জাতীয় প্রেসক্লাব ও বিএফইউজের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ। প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি এম আবদুল্লাহ, বিশেষ অতিথি ছিলন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন। সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়া’র সভাপতি মীর্জা সেলিম রেজার সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়া’র সাধারন সম্পাদক গণেশ দাস, সাবেক সভাপতি সৈয়দ ফজলে রাব্বী ডলার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মমিনুর রশিদ শাইন, আবুল কালাম আজাদ, সহসভাপতি আব্দুর রহীম, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহফুজ মন্ডল, নির্বাহী সদস্য এস এম আবু সাঈদ, আতাউর রহমান মিলন প্রমূখ। কোরআন তেলাওয়াত করেন সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান আকন্দ। অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন সংগঠনের সহ-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ।
প্রধান অতিথি শওকত মাহমুদ তার বক্তব্যে বলেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা আল্লাহ প্রদত্ত, কিন্তু বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকার মত প্রকাশ ও ভোটের অধিকার হরণ করেছে। ভোট দেওয়ার মধ্য দিয়েও মানুষ এক ধরণের মত প্রকাশ করে। অতএব ভোটাধিকারও আল্লাহ প্রদত্ত অধিকার। তিনি বলেন, এখন দেশে আওয়ামী লীগ, বিএনপি বা জামায়াতে ইসলামীপন্থী সাংবাদিক হিসেবে বিভাজন নেই। আছে ফ্যাসিবাদের পক্ষের শক্তি ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তি। জড়তা কাটিয়ে সাহসের সাথে ফ্যাসীবাদী শাসনের পতন আন্দোলন জোরদার করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে একটি শ্রেণির হাতে মিডিয়া চলে গেছে। তারা এখন সূর্যমূখি ফুলের ভূমিকায় আছেন। সূর্যমূখি ফুল যেমন সব সময় সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে তেমনি সেই সব মিডিয়া এবং তথাকথিত সাংবাদিকরা সরকারের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে এবং সরকারের গুনগান গাওয়া নিয়ে ব্যস্ত। তারা কোন দিনই দেশের স্বাধীনতা চায় না, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা চায় না। তারা নিজেদের স্বার্থ হাছিলেই ব্যস্ত।
তিনি বলেন, রুহুল আমিন গাজীকে গ্রেফতার করে দীর্ঘদিন আটক রাখা সরকারের সাংবাদিক নিপীড়নেরই ধারাবাহিকতা। তিনি অবিলম্বে রুহুল আমিন গাজীর মুক্তি দাবি করেন।
প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে’র) সভাপতি এম আবদুল্লাহ
এসময় বিএফইউজে সভাপতি এম আবদুল্লাহ বলেন, সাংবাদিক নির্যাতন-নিপীড়ন ক্রমাগতভাবে বেড়ে চলেছে। প্রতি মাসে গড়ে ৬ থেকে ৮ জন করে সাংবাদিক হামলা, মামলাসহ নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। ক্ষমতাধররা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে তাদের দুর্নীতি লুটপাটের রক্ষাকবচ হিসেবে ব্যবহার করছে। নির্যাতন, নিপীড়ন ও গণমাধ্যম দলনের বিরুদ্ধে সাংবাদিক সমাজকে ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে। তিনি বলেন, রুহুল আমিন গাজী দীর্ঘ প্রায় তিন যুগ সাংবাদিকদের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। তাঁকে বানোয়াট মামলায় গ্রেফতার করে দশ মাস কারাবন্দী করে রাখা হয়েছে। অবিলম্বে তাঁকে মুক্তি না দিলে বিএফইউজে’র নেতৃত্বে সাংবাদিক সমাজ সারাদেশে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবে। এম আবদুল্লাহ বগুড়ার গর্বিত সন্তান, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারের ওপর আরোপিত অসাংবিধানিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ারও আহবান জানান।
তিনি আরো বলেন, রুহুল আমিন গাজীকে যেভাবে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এ পর্যন্ত বাংলাদেশে কোন সাংবাদিকদের এরকম ভাবে তুলে নেয়ার ঘটনা ঘটেনি। করোনা কালে ৫০ হাজার ফৌজদারি অপরাধির জামিন হয়েছে কিন্তু রুহুল আমিন গাজীর জামিন হয়নি। কারণ এই বাংলাদেশে আইন আদালত যতটুকু আছে সবকিছুই একটা গোষ্ঠির জন্য। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি পাশ করা হয়েছে ২০১৮ সালের অক্টোবরে। তার পর থেকে এপর্যন্ত শতশত সাংবাদিক, শিক্ষক ও পেশাজীবিকে ঠুমকো অযুহাতে যখন তখন ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এই ডিজিটাল আইনে প্রতি মাসে ৭ থেকে ৮ জন সাংবাদিক নির্যাতিত হচ্ছে। আর যদি আমরা অন্যান্য পেশাজীবি ধরি তাহলে প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ জন মানুষ এই আইন নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। এই ডিজিটাল আইনটি হচ্ছে এই লুটেরা সরকারের রক্ষা কবজ। তাদের দুর্নীতি, লুটপাট, হত্যা, রাহাজানি ও গুম যেন সংবাদ মাধ্যমে, সামাজিক মাধ্যমে প্রচার না হতে পারে সেই জন্য এই ডিজিটাল আইন। তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতার দরজা দিয়ে প্রবেশ করে এদেশের গণতন্ত্র এবং গণমাধ্যমের বাক স্বাধীনতা তখন জানালা দিয়ে পালায়। সরকার আরেকটি কালাকানুন আইনের প্রস্ততি নিচ্ছে। সেটি আইন মন্ত্রনালয়ে গেছে যার নাম দেয়া হয়েছে ‘ডেটা প্রটেকশন আইন’। সেই আইন টি করা হয়েছে ডিজিটাল আইন দিয়ে যাদের ধরা যাচ্ছে না তাদেরকে এখন ওই আইন দিয়ে ধরাতে পারবে। এই আইনটি আরো জঘন্য। এ দেশের সাংবাদিক সমাজ সবসময় গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের বাক স্বাধীনতার পক্ষে শক্তভাবে দাঁড়িয়েছে। আগামী দিনেও এধরণের কালাকানুনের বিরুদ্ধে যে যেখানে আছি সেখান থেকে রুখে দাঁড়াতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন।
বিএফইউজের মহাসচিব নূরুল আমিন রোকন বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে, তখনই গণমাধ্যমের টুটি চেপে ধরেছে। দাগী খুনি, সন্ত্রাসীদের জামিন হচ্ছে প্রতিদিন, অথচ শীর্ষ সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীর জামিন নিয়ে টালবাহান চলছে। এটা চরম অন্যায়। অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিতে হেবে।