বছরের প্রায় অর্ধেক সময়জুড়েই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জনমত গঠন করতে ব্যস্ত থাকেন হানিফ বাংলাদেশী নামের এক তরুণ। কখনো বেকার সমস্যা সমাধনে সরকারের কার্যকরী পদক্ষেপ দাবী, কখনো প্রতীকী লাশ কাধে নিয়ে ৬৪ জেলা পায়ে হেটে সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদ করেছেন। আবার ভোটাধিকারের দাবিতে বাংলাদেশের টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পদযাত্রা করেন। নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগের দাবিতে পঁচা আপেল নিয়ে প্রতিবাদ। দুর্নীতি বন্ধের জন্য ৬৪ জেলার ডিসিকে স্বারকলিপি দেয়াসহ হানিফের নানাধরণের অভিনব প্রতিবাদ দেখেছেন সাধারণ মানুষ। হানিফ এসব প্রতিবাদ নিজ উদ্যোগে একাই বাস্তবায়ন করেছেন। একাই তিনি দেশব্যাপি ঘুরে ঘুরে বিগত কয়েক বছরধরে এসব প্রতিবাদ এবং জনমত গঠন করে আসছেন।
এবার তিনি নাগরিকদের নির্বিঘ্ন পরিবেশে ভোটাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে আইন প্রণয়ন এবং শক্তিশালী নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন। মাথায় প্রতীকী ভোটের বাক্স নিয়ে ৬৪ জেলা প্রদক্ষিণ করার জন্য ২৪ অক্টোবর রোববার সকাল ১১ টায় টেকনাফ জিরোপয়েন্ট থেকে যাত্রা শুরু করেছেন। পুরো বাংলাদেশে ঘুরে তিনি উত্তরের শেষপ্রান্ত তেঁতুলিয়ার জিরোপয়েন্টে কর্মসূচি শেষ করবেন। এতে ৬০ থেকে ৭০ দিন সময় লাগবে বলে জানান হানিফ বাংলাদেশী নামের ওই তরুণ।
তিনি এই প্রতিবেদককে আরো বলেন, এবারের কর্মসূচি পালনে তিনি গণপরিবহন ব্যবহার করে বিভিন্ন জেলায় যাবেন। তিনি বাংলাদেশেী নাগরিকদের নির্বিঘ্ন পরিবেশে ভোটাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে আইন প্রণয়ন এবং শক্তিশালী নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবিতে ৬৪ জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করবেন। সেই সাথে জেলার প্রেসক্লাব প্রঙ্গণসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে অবস্থান করে দাবী আদায়ে জনমত গঠন করবেন।
হানিফ মুঠোফোনে এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে অর্জিত দেশের সংবিধানে বলা আছে রাষ্ট্রের মালিক জনগণ। রাষ্ট্রের উপর জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠার প্রথম শর্ত হলো ভোটাধিকার। স্বাধীনতার ৫০ বছর যাবত যখন যে দল রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসেছে, সে দলই কম-বেশি ভোটাধিকার গণতন্ত্রকে বাঁধাগ্রস্ত করেছে। রাজনীতিতে প্রতিদ্বন্দ্বীতা থাকবে কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতি প্রতিহিংসা থেকে সহিংস পরায়ণ, অবিশ্বাসের সংস্কৃতিতে রুপ নিয়েছে। দেশে মানবিক মূল্যবোধ সৃষ্টি করতে রাজনীবিদেরা ব্যর্থ হয়েছে। রাজনীতিতে যে আস্থার সংকট তার জন্য রাজনীতিবিদরাই দায়ি। এখন জনগণের ভোটাধিকার ও নিবিঘ্ন ভোট দেওয়ার পরিবেশ সৃষ্টি করতে প্রশাসনকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে।
উল্লেখ, হানিফ এর আগে ২০১৯ সালের ১২ মার্চ থেকে ১৪ এপ্রিল ভোটাধিকারের দাবিতে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পদযাত্রা করেছিলেন। একই বছর ১৪ মে নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগের দাবিতে পঁচা আপেল নিয়ে প্রতিবাদ করেছেন। একই বছরের ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত দুর্নীতি বন্ধের জন্য ৬৪ জেলার ডিসিকে স্বারকলিপি দিয়েছেন এবং দুর্নীতিবাজদের উদেশ্যে জেলায় জেলায় লালকার্ড প্রদর্শন করেছেন। ২০২০ সালের ১ অক্টোবর থেকে ২০ অক্টোবর প্রতিকী লাশ নিয়ে ঢাকা থেকে কুড়িগ্রামের অনন্তপুর সীমান্ত অভিমুখে পায়ে হেঁটে সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।