‘গণতন্ত্র রক্ষায় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের চেতনায় আরেকটি বিপ্লব দরকার। ৭ নভেম্বর সৈনিক-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবে আমাদের মাতৃভূমি প্রভাবমুক্ত হয়ে স্বাধীন অস্তিত্ব লাভ করে এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথচলা নিশ্চিত হয়। তাই জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস থেকে আমাদেরকে শিক্ষা নিয়ে বর্তমান অবৈধ সারকারের হাত থেকে অবরুধ গণতন্ত্র মুক্ত করতে হবে। এই জন্য জনগণকে সাথে নিয়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে’। ৭ নভেম্বর রোববার বিকালে বগুড়া জেলা বিএনপি আয়োজনে একটি হলরুমে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে বগুড়া জেলা বিএনপির আহবায়ক ও বগুড়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম মোঃ সিরাজ এসব কথা বলেন।
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন বগুড়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেন।
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আলী আজগর তালুকদার হেনার সঞ্চলনায় এমপি সিরাজ আরো বলেন, সেভাবেই ৭ নভেম্বর আমাদের সিপাহী জনতা সংহতি প্রকাশ করেছিল। এরপরই দেশে গণতন্ত্র, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, মুক্তবাজার অর্থনীতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। দেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে ৭ নভেম্বর থেকেই একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা করার সেই সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল এবং এর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত নেতাকর্মীরা।
তিনি আরো বলেন, ৭৫-এর ৭ নভেম্বর সৈনিক-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবে আমাদের মাতৃভূমি প্রভাবমুক্ত হয়ে স্বাধীন অস্তিত্ব লাভ করে এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথচলা নিশ্চিত হয়। স্বদেশবাসীর জাগরিত দৈশিক চেতনায় পরাজিত হয় আধিপত্যকামী শক্তির অশুভ ইচ্ছা। ১৯৭৫ সালের এ দিনে স্বাধীনতার চেতনায় আধিপত্যবাদী শক্তির নীল নকশা প্রতিহত করে এদেশের বীর সৈনিক ও জনতা।
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন বগুড়া জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বগুড়া পৌরমেয়র রেজাউল করিম বাদশা।
তিনি আরও বলেন, আজকে দেশের স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ দেশের সব প্রতিষ্ঠানকে তারা নির্মমভাবে ধ্বংস করেছে। দেশে মানুষের বাক স্বাধীনতা নেই, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই ও গণতন্ত্র নেই। দেশে ফ্যাসিস্ট শাসন কায়েম করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। ৭ নভেম্বর সিপাহী জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমেই বাংলাদেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়েছিল। যে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কারণে ৩ নভেম্বর স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে গৃহবন্দি করা হয়েছিল, সেই চক্রান্তকে ব্যর্থ করে দিয়ে এদেশের দেশপ্রেমিক সিপাহী এবং জনগণ ৭ নভেম্বর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে মুক্ত করে দেশে সত্যিকার অর্থে স্বাধীনতাকে সুসংহত করেন। তিনি বলেন, বর্তমান অবৈধ সরকারের চরম প্রতিহিংসার শিকার দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে বন্দি রেখে দেশকে আবারও স্বাধীনতা পরবর্তীকালের মতো পরিস্থিতির মুখোমুখি করতে যে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে, তা থেকে উত্তরণে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নেমে আসতে হবে। সেজন্য আজকে আমাদেরকে শপথ নিতে হবে, আমরা গণতন্ত্রকে উদ্ধার করবো, মিথ্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আমাদের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব এবং এই গণতন্ত্রের সংগ্রামকে অবশ্যই জয়ী করবো ইনশাআল্লাহ।
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হাসানাত আলী।
আলোচলা সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক বগুড়া পৌর মেয়র অ্যাডভাকেট একেএম মাহবুবর রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক এমপি মোঃ হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, বগুড়া পৌর মেয়র ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রেজাউল করিম বাদশা, বগুড়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য মোশাররফ হোসেন, লেখক ও গবেষক ডাঃ সিএম ইদ্রিস, শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ডাঃ মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাঃ হাসানাত আলী, বগুড়া জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এ্যাড. সাইফুল ইসলাম, ফজলুল বারী তালুকদার বেলাল, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য জয়নাল আবেদীন চাঁন, লাভলী রহমান, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাহবুবর রহমান বকুল, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আবু হাসান, সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী রিগ্যানপ্রমুখ।
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন প্রবীন চিকিৎসক সি এম ইদরিস।
এর আগে সকাল ৭: ৩০ মিনিটে দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল ৭: ৪৫ মিনিটে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ। সকাল ৯ টা থেকে দলীয় কার্যালয় হইতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাষন প্রচার।