নিজস্ব প্রতিনিধি: ‘বিএনপির পদ পেতে এখন ত্যাগ তিতিক্ষার প্রয়োজন হয় না। গায়েবি পথে কমিটিতে স্থান পাওয়া যায়। সারাজীবন দল করে অনেকে ইউনিয়ন কমিটিতে জায়গা পায় না আবার কেউ বিশ্বস্থ আওয়ামী পরিবারের হয়েও কেন্দ্র কমিটিতে জায়গা পায়। আজব দলের হঠাৎ নেতার আর্বিভাব। সামনে হয়তো বিএনপির সুদিন আসছে এমন সম্ভাবনায় সুযোগ সন্ধানীরা কৌশলে দলে আসতে চাইছেন’। এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশে করছেন বগুড়ার সোনাতলা বিএনপির অনেক নিবেদিত নেতাকর্মী।
তারা সাম্প্রতি জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রস্তাবিত কেন্দ্রীয় কমিটিতে বেসরকারি একটি ব্যাংকের এক কর্মকর্তার নাম অন্তর্ভূক্তি নিয়ে এমন মন্তব্য করেনে। জানা যায়, তৌহিদুল ইসলাম টিটু নামের ওই ব্যাংক কর্মকর্তার পৈত্রিক নিবাস বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায়। তার শ্বশুর আতাউর রহমান গেদা সোনাতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। একইসাথে তার চাচা অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম মন্টু বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি। এছাড়াও তার অপরাপর আত্মীয় স্বজন সবই আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত। সোনাতলা উপজেলায় ওই পরিবারটি আওয়ামী পরিবার হিসেবে বিশেষভাবে চিহ্নিত।
২০১৪ সাল থেকে সোনাতলা উপজেলা বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীদের ওপর নির্যাতন, মামলা, হামলার অধিকাংশ ঘটনার সাথে জড়িত রয়েছেন ওই ব্যাংক কর্মকর্তার শ্বশুর আতাউর রহমান গেদা এমন অভিযোগ তৃণমূল নেতা কর্মীদের।
এপ্রসঙ্গে সোনাতলা উপজেলার পাকুল্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লতিফুল বারী বলেন, বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনসমুহের পদ পেতে ত্যাগ তিতিক্ষার প্রয়োজন হয়না। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন তাই যদি হতো তাহলে বিএনপি নেতা কর্মীদের কাছে মুর্তিমান ত্রাস একটি পরিবারের সদস্য কিভাবে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়?
এই ঘটনা সোনাতলা উপজেলা বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। বগুড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সামনে হয়তো বিএনপির সুদিন আসছে এমন সম্ভাবনায় সুযোগ সন্ধানীরা দলে আসতে চাইছেন। তারা আরো বলেন, ব্যাংক কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম টিটুর পরিবারের একজন সদস্য হলেন রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান, পুলিশ ও সিভিল প্রশাসনের কিছু উর্ধ্বতন কর্মকর্তাও তার আত্মীয়। ওইসব স্বজনরা আওয়ামী লীগের বিশ্বস্ত খাদেম হিসেবে প্রশাসনের ভালো ভালো চেয়ার হোল্ড করে অনেক টাকা কামিয়েছেন।
ক্ষমতার পটপরিবর্তন হলে যাতে নিরাপদে থাকা যায় এমন উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই হয়তো বিএনপির একটি অঙ্গদলে অনুপ্রবেশের চেষ্টা। বিষয়টি সম্পর্কে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত বছরের সেপ্টেম্বরে স্বেচ্ছাসেবক দলের সুপার ফাইভ কমিটি নিয়ে সংগঠন চলছে। ফলে একটি পুর্ণাঙ্গ জাতীয় কমিটি গঠন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। সেজন্যই একটি প্রস্তাবিত কমিটি অনুমোদনের জন্য জমা দেওয়া হয়েছে। ওই কমিটিতে তৌহিদুল ইসলাম টিটু নামের কেউ আছে কি না মনে পড়ছেনা। বিষয়টি এখন হাই কমান্ডের এখতিয়ারের মধ্যে চলে গেছে।