নিজস্ব প্রতিবেদক: ববগুড়ার বিশিষ্ট শিল্পপতি সেখ সরিফ উদ্দিনের স্ত্রী মৃত দেলোওয়ারা বেগমের স্বাভাবিক মৃত্যু নাকি হত্যা। রাতারাতি কাউকে না জানিয়ে দাফন করায় এ নিয়ে জনমনে হাজারো প্রশ্ন বিরাজ করছে। তবে দেলওয়ারা বেগমের অর্থ সম্পদ আত্মসাৎ করার কু-উদ্দেশ্যে লিপ্ত হয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবী করছেন দেলওয়ারা বেগমের মেয়ে মোছাঃ আকিলা সরিফা সুলতানা খানম। তিনি হত্যার বিচার চেয়ে মামলাও করেছেন বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। মঙ্গলবার (৯ মে) আদালত মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
মামলার আসামীরা হলেন, বগুড়া শহরের কাটনারপাড়ার এনায়েত আলী খান লেনের মৃত দুদু মিয়ার ছেলে মোঃ আবুল হোসেন খোকন ওরফে ব্যাঙ্গা খোকন (৫৪), মোঃ আবুল হোসেন খোকন ওরফে ব্যাঙ্গা খোকনের স্ত্রী নাদিরা সরিফা সুলতানা (বিলকিছ) (৪৫), মোঃ আবুল হোসেন খোকন ওরফে ব্যাঙ্গা খোকনের ছেলে সাকিব হোসেন নিলয় ওরফে ক্যালা নিলয় (২৪), শহরের টিনপট্টি এলাকার মৃত মোসলেম উদ্দিনের ছেলে মোঃ মোফাজ্জল হোসেন রঞ্জু ওরফে ধলা মিয়া (৫০), মোঃ মোফাজ্জল হোসেন রঞ্জু ওরফে ধলা মিয়ার স্ত্রী তৌহিদা সরিফা সুলতানা (শান্তনা) (৪৩), জেলখানা মোড় এলাকার মৃত তবিবর রহমানের ছেলে মোঃ ফেরদৌস আলম ফটু (৫২), কাটনারপাড়া এলাকার এ,টি,এম রুহুল আমিন সঞ্জিবের স্ত্রী মাহবুবা সরিফা সুলতানা (আমেনা) (৪৬), কাটনারপাড়ার পিন্টু সরকারের ছেলে এ,টি,এম রুহুল আমিন (সঞ্জিব) (৪৫), মোঃ ফেরদৌস আলম ফটুর স্ত্রী কানিজ ফাতেমা পুতুল (৪৪), মৃত সাইফুল ইসলামের ছেলে সাফিউল আলামিন সুমন ভোটা সুমন (২৯)।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, আসামীগণ পরষ্পরের যোগসাজসে মামলার বাদী মোছাঃ আকিলা সরিফা সুলতানা খানম এর মাতা মৃত দেলওয়ারা বেগমের অর্থ সম্পদ আত্মসাৎ করার কু-উদ্দেশ্যে ১নং আসামী ও তার স্ত্রী ২নং আসামী পরষ্পর অন্যান্য আসামীদের সাথে যোগসাজস করে মৃত দেলওয়ারা বেগমকে জিম্মি করে ১ ও ২নং আসামীর বাড়ীতে আটক করে রেখেছিল। এমতাবস্থা চলাকালে আসামীরা পরষ্পর সম্মিলিতভাবে বাদীনির মাতার সকল জমি-জমা ও সম্পদ লিখিয়া চাইলে, বাদীনির মাতা অস্বীকার করে এবং জানায় যে, বাদীনির মাতা দেলোওয়ারা বেগম বাদী মোছাঃ আকিলা সরিফা সুলতানা খানমের সাথে সাক্ষাৎ করবে। এ ঘটনার পর আসামীরা অত্যান্ত ক্ষিপ্ত হয় এবং ঘটনার দিন সকল আসামীরা বাদী মোছাঃ আকিলা সরিফা সুলতানা খানমের মাতার শ্বাসরোধ করে অথবা বিষক্রিয়ার মাধ্যমে বাদীর মাতা মৃতা দেলোওয়ারা বেগমকে হত্যা করেছে। পরে আসামীরা সম্পূর্ণ গোপনে ও কাউকে কিছু না জানিয়ে অতিদ্রুত চলতি বছরে ৪ মে তারিখের বাদ যোহর বাদীনির মাতা দেলোওয়ারা বেগমের লাশ দাফন-কাফন সম্পূর্ণ করে।
উক্ত বিষয়টি নিয়ে শহর জুড়ে চলছে নানা রকম গুঞ্জন। লোকমারফত জানতে পেলে মোছাঃ আকিলা সরিফা সুলতানা খানম ওইদিন সকাল ৯ টায় ঘটনাস্থলে দেলোওয়ারা বেগমকে দেখতে গেলে আসামীরা বাদী ও স্বাক্ষীগণকে লাশ দেখতে দেয়নি ।
মামলার বাদী মোছাঃ আকিলা সরিফা সুলতানা খানম জানিয়েছেন, আসামীরা আমার মাতা মৃত দেলোওয়া বেগমের বসতবাড়ীতে কাটনারপাড়ায় ডেকে আমার মাতার মৃত্যুর কথা বললে আসামীরা কোন প্রকার সন্তোষজনক উত্তর দেয়নি বরং উল্টো স্বাক্ষীগণকে মৃত্যুর হুমকি প্রদর্শন করে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। আমার বিশ্বাস আসামীরা আমার মাতাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। উল্লেখ্য, মৃত দেলওয়ারা বেগমের মেয়ে মোছাঃ আকিলা সরিফা সুলতানা খানম (৮ মে) মঙ্গলবার বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন । মঙ্গলবার (৯ মে) পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর কাছে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেয় আদালত ।