অধ্যক্ষ প্রফেসর জোহরা ওয়াহিদা রহমান। শিক্ষার্থীদের প্রিয় জোহরা ম্যাম। কর্মজীবনের শেষ দিনটাকেও মুখর করে রেখেছিলেন ভালোবাসার প্রতিষ্ঠান বগুড়ার সরকারি মুজিবুর রহমান মাহিলা কলেজের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত পর্যন্ত। তাঁর আদর স্নেহের পরশে কলেজ প্রঙ্গনে ফুটেছে হাজারো ফুল। সবখানেই তাঁর কোমল হাতের ছোঁয় লেগে আছে। সেই প্রিয় কলেজ থেকে অবসরে যাচ্ছেন জোহরা ম্যাম। আগামীকাল মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) তিনি শেষ বারের মত অধ্যক্ষের চেয়ারে বসবেন। কলেজ পরিচালনা করবেন। এরপর হবে সদ্য বিদায়ী।
সোমবার দিনব্যাপী শিক্ষক কর্মচারীদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় বর্ণিল বিদায় অনুষ্ঠান। প্রিয় অভিভাবকে বিদায় দিতে মঞ্চজুড়ে নেমে আসে পিনপতন নীরবতা।
দুপুর ১২টায় শুরু হয় কলেজ মাঠে অনুষ্ঠান। প্রিয় শিক্ষককে নিয়ে হাজারো স্মৃতি আওরায় শিক্ষার্থী শামীমা আকতার। তারপর একে একে মঞ্চে স্মৃতিচারণ করেন উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. বেলাল হোসেনসহ শিক্ষক কর্মকর্তা এবং কর্মচারীগণ। এসময় অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন সবাই।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, কলেজ শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ গোলজার হোসেন। মঞ্চে উপস্থিত হন সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক খন্দকার কামাল হোসেন, কলেজের প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্য তৈফিকুর রহমান বাপ্পি ভান্ডারীপ্রমূখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জনাব আই, আর, এম সাজ্জাদ হোসেন।
উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. বেলাল হোসেন বলেন, কলেজকে দৃষ্টিনন্দন এবং শিক্ষার পরিবেশ তৈরিতে অধ্যক্ষ মহোদয়ের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। সব চেয়ে বেশি তিনি আলোচিত হয়ে থাকবেন সম্প্রতি তার উদ্যোগে প্রকাশিত কলেজের স্মারকগ্রন্থটি। তিনি মনে করেন, যেকোন কলেজের জন্য স্মারকগ্রন্থ একটি মাইল ফলক হিসেবে বিবেচিত হয়। উত্তরের বড় কলেজগুলোর মধ্যে মাত্র চারটি সরকারি কলেজ এপর্যন্ত স্মারকগ্রন্থ করতে পেরেছে। তার মধ্যে সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজ একটি।
অনুষ্ঠানে বিদায়ী অধ্যক্ষ প্রফেসর জোহরা ওয়াহিদা রহমানের বক্তব্যে আবেগ ঘণ পরিবেশের সৃষ্টি হয়। তিনি বলেন, আমি এই কলেজকে নিজের সংসারের মত করে গড়েতোলার চেষ্টা করেছি। সবার সহযোগিতা নিয়েই আমি আমার কর্মজজ্ঞ পরিচালনা করেছি। সবাই আমাকে আপন মনে করে সব কেক্ষেত্রেই দিধাহীনভাবে সহযোগিতা করেছে। আমি সবার কছে আজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো। তিনি আরো বলেন, আজকের দিনটি আমার জন্য এবং কলেজের জন্য উজ্জ্বল ও স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আমার শিক্ষকতার শেষ সময়ে এসে আমাকে নিয়ে এমন একটি আয়োজন বিশেষভাবে মনে থাকবে। এই কলেজে শিক্ষার্থী হিসেবে ঢুকে অধ্যক্ষ হয়ে অবসর নিতে পেতে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি।