আশুলিয়ার বাইপাইলের জমঈয়ত ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ জমঈয়তে আহলে হাদিসের উদ্যোগে দুইদিনব্যাপী দাওয়াহ্ ও তাবলিগি মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) শেষ দিনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকাস্থ সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আস দুহাইলান। মহাসম্মেলনে সৌদি আরব, জর্ডান, মিসর, ভারত ও নেপালসহ কয়েকটি দেশের আন্তর্জাতিক স্কলাররা অংশগ্রহণ করেন।
সংগঠনটির সভাপতি ড. আব্দুল্লাহ ফারুকের সভাপতিত্বে শুক্রবার সকাল ৮টায় মহাসম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়। এ অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল ইসলামী ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান, জমঈয়ত উপদেষ্টা ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সৌদি আরবের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক যেমন বন্ধুত্বপূর্ণ, জমঈয়তে আহলে হাদিসের সঙ্গেও সম্পর্ক নিবিড়। আমরা মনে করি, তৌহিদ, বিশুদ্ধ আকিদা ও ইসলামি ভ্রাতৃত্বের ওপর এ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। শিরক-বিদআত মুক্ত সমাজ গড়তে জমঈয়তে আহলে হাদিস এদেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তাওহিদভিত্তিক দ্বীন প্রচারে সৌদি আরব যেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে, সমৃদ্ধ উম্মাহ গঠনেও সৌদি আরব সর্বদা বাংলাদেশের পাশে আসে।
সম্মেলনে বিশ্ববরেণ্য আলেমে দীন, সৌদি ধর্ম মন্ত্রণায়ের বিশিষ্ট দাঈ শাইখ মাহির বিন যফির আল কাহতানী জুমুআর খুতবা প্রদান ও নামাযে ইমামতি করেন। তার আরবি খুতবার বঙ্গানুবাদ করেন সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল শাইখ ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ খান মাদানী। খুতবায় শাইখ কাহতানী বলেন, আমাদেরকে সঠিক পথে শান্তির খোঁজ করতে হবে, শান্তির উৎস খুঁজে বের করতে হবে। এজন্য আল্লাহকে যথাযথ ভয় করা জরুরি। ইবাদতের ক্ষেত্রে রাসূল (সা.)-এর সুন্নাহ অনুসরণ করতে হবে অন্যথায় তা বাতিল বলে গণ্য হবে। মনে রাখতে হবে, সালাফদের মানহাযই ঈমান ও আকীদার মানদণ্ড। অতএব আমাদেরকে সালাফী মানহাযের উপর থাকতে হবে। জুমার নামাজে লাখো জনতার ‘আমিন’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে মহাসম্মেলন প্রান্তর।
সমাপনী অধিবেশনের শুভ উদ্বোধন করেন ঢাকা-১৯ আসনের সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় জমঈয়তের উপদেষ্টা আলহাজ মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।
মহাসম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে আমন্ত্রিত বিদেশি অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য প্রদান করেন জর্ডানের শাইখ ড. উসামা আতায়া আল উতাইবি, মিসরের আল ইসকান্দারিয়া ইউনিভার্সিটির প্রফেসর শাইখ ড. তলা‘আত আব্দুর রাজিক মাহমুদ যাহরান প্রমুখ।
এ অধিবেশনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জমঈয়ত উপদেষ্টা ও মাস্কো গ্রুপের চেয়ারম্যান আলহাজ এম এ সবুর। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় জমঈয়তের নেতারা, দেশবরেণ্য শিক্ষাবীদ ও ওলামায়ে কিরাম।
সমাপনী বক্তব্যে সালাফি আকিদা ও মানহাজের অনুসারীদের প্রতি ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে জমঈয়ত সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ ফারুক বলেন, নেতৃত্ব, আমিত্ব এবং স্বার্থ আমাদের অন্ধত্ব করেছে। সেই স্বার্থ চরিতার্থ করতে আমরা আজ দল ও ব্যক্তিকেন্দ্রিক বিভক্তি সৃষ্টি করছি। কিন্তু আল্লাহ তাআলার ফজল ও করমে জমঈয়তে আহলে হাদিস স্বমহিমায় উদ্ভাসিত রয়েছে এবং কাঙ্ক্ষিত সোপানের পথে এগিয়ে চলেছে।