বগুড়া শহরের বনানী এলাকার শুভেচ্ছা আবাসিক হোটেলের একটি কক্ষে মা ও ১১ মাসের ছেলে শিশুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাতের কোন এক সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের হত্যা করা হয়। হত্যার পর শিশুটির শরীর থেকে মাথা আলাদা করে করতোয়া নদীতে ফেলে দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ নিহতের স্বামী আজিজুল হককে আটক করে থানায় নিয়ে গেছে।
নিহতরা হলেন আশা মনি (২২)। তার শিশু ছেলে আবদুল্লাহ হেল রাফি (১১ মাস)। আশা মনির স্বামীর বাড়ি বগুড়ার ধুনট উপজেলায়। বাবার বাড়ি বগুড়ার নারুলী এলাকায়।
আশা মনির স্বামীর নাম আজিজুল হক (২৫)। তিনি সেনা সদস্য হিসেবে চট্টগ্রামে চাকরি করেন। তারা গতকাল শনিবার দিবাগত সন্ধ্যা সাতটার দিকে তমা ও মিরাজ পরিচয়ে হোটেলে ওঠেন। বাড়ি উল্লেখ করা হয় রংপুরের পীরগঞ্জ।
আশা মনির চাচা আব্দুর রাজ্জাক জানান, সকাল ৯ টার দিকে আমরা নিখোঁজের বিষয়ে মাইকিং শুরু করি। আর আশা মনির বাবা ও জামাই কে নিয়ে সদর থানায় যাই জিডি করতে। কিন্তু জিডি করার সময় জামাই আজিজুল তালবাহানা করতে থাকে। এর একপর্যায়ে বেলা ১১ টার দিকে বনানী থেকে খুন হওয়ার খবর আসে। খবর পেয়ে আমরা ছুটে যায় সেখানে।
হোটেল সূত্র জানায়, সকালে হোটেলে এসে আজিজুল রুম ছেড়ে দেয়ার কথা জানান। এই সময় ম্যানেজার রুম বুঝিয়ে চাইলে তালবাহানা শুরু করে আজিজুল। ম্যানেজার চাপাচাপি করলে এক পর্যায়ে হত্যার কথা স্বীকার করেন আজিজুল। তখন বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়।
আটকের পর আজিজুল হক পুলিশকে জানায়, গতকাল আজিজুল তার স্ত্রী সন্তানকে রিকশায় বাসায় পাঠিয়ে দেয়ার পর সে ওই হোটেলের রুমে উঠে মা এবং বাচ্চাকে ফোনে হোটেলে ডেকে নেয়। এরপর হোটেলে তার স্ত্রী সন্তান আসার পর তাদেরকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। এরপর তার সন্তানের মাথা শরীর থেকে আলাদা করে একটি ব্যাগে ভরে হোটেল থেকে বের হয়ে পাশেই করতোয়া নদীতে ফেলে দেয়।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম বলেন, আজিজুল একজন সেনা সদস্য। তার স্ত্রী ও সন্তানকে হোটেল কক্ষে শনিবার রাতে স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যা করে আজিজুল। পরে রাত নয়টার দিকে সন্তানের মাথা একটি ব্যাগে করে নিয়ে হোটেল থেকে বের হয় সে। বের হয়ে করতোয়া নদীতে ফেলে দেন আজিজুল হক। পুলিশ তার দেয়া তথ্যে সেই মাথার সন্ধান করছে। এই ঘটনায় মামলা হবে। সেই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।