উত্তর জনপদের শষ্যভান্ডার জেলা নওগাঁ। এ জেলার ধান কাটা মারা মৌসুমে কাকডাকা সকালে ঘুম থেকে উঠেই শুরু হয় নিপেন চন্দ্রের জীবনের তাগিদে বিভিন্ন গ্রামে অলিগলি, স্কুল,কলেজ,হাসপাতাল,রেলস্টেশন ঘুরে ঘুরে আইসক্রিম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন নিপেন চন্দ্র সাহা।
নিপেন চন্দ্র সাহার পার্শ্ববতী উপজেলার কাতিলা মাধাইমুড়ি গ্রামের বাসিন্দা। তীব্র রোদ আর ভ্যাপসা গরম। দুইয়ে মিলে প্রাণ যায় যায় অবস্থা। ঘর থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গায়ের ঘামে ভিজে যায় পড়নের কাপড়। এ অবস্থায় সামান্য স্বস্তি খুঁজতে মড়িয়া আত্রাইবাসী। অনেকেই তীব্র গরম থেকে বাঁচতে বেঁছে নেন ঠান্ডা কোমলপানীয়। আবার অনেকের ভরসা আইসক্রিমে।
তাই প্রত্যেক বছর এপ্রিলের শুরু থেকে বেড়ে যায় আইক্রিমের চাহিদা। ব্যতিক্রম হয়নি এ বছরও। দুপুরে উপজেলার সাহেবগঞ্জ পালপাড়ায় দেখা হয় নিপেন চন্দ্র সাহার সাথে। আলাপচারিতায় তিনি বলেন, শীত,গরম, রোদ,বৃষ্টি যাই হোক না কেন তাকে জীবনের তাগিদে আইসক্রিম বিক্রি করতে যেতেই হবে। না হলে সংসার চলবে কি করে? এক প্রশ্নের জবাবে নিপেন্ চন্দ্র সাহা বলেন, যত্ন সহকারে রুচি সম্মত আইসক্রিম আমি নিজে তৈরি করি । এতে দুধ, চিনি, এলাচ, বাদাম, কিসমিচ আর গরম মসল্লার প্রয়োজন হয়। এগুলোর মিশ্রনে তৈরি হয় আইসক্রিম। স্বাদের সঙ্গে সুঘ্রাণেরও যে নিবিড় সম্পর্ক আছে, সেটা তুলার মতো নরম আইসক্রিম মুখে দিলে স্বাদ নিতে পারেন।
তিনি আরো বলেন, গত২০ বছর ধরে আইসক্রিম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছি। সারাবছর আইসক্রিম বিক্রি করলেও শীত মৌসুমে বিক্রি কম হয়। আইসক্রিম কিনতে আসা সাহেবগঞ্জ গ্রামের আব্দুল মতিন মন্ডল নামের এক ক্রেতা বলেন,যখন স্কুলে পড়তাম প্রতিদিন বাবা-মায়ের কাছে বায়না ধরতাম আইসক্রিম খাওয়ার জন্য। স্কুলের সামনে বসতো আইসক্রিম ওয়ালা, ওখান থেকে অনেক আইসক্রিম খাওয়া হয়েছে তবে এখন আর আইসক্রিম কেনা হয় না। এখন আগের মতো আইসক্রিম বিক্রেতাদের রাস্তা-ঘাটে দেখাও যায় না। মালিপুকুর গ্রামের আজাদ আলী বলেন, গরীব হলেও নিপেন চন্দ্র সাহা খুব সৎ মানুষ। কষ্ট করলেও তার মুখে সব সময় হাসি লেগেই থাকে। সব সময় পরিপাটি থাকা মিষ্টিভাষী এই মানুষটি কখনও কারও ক্ষতি করেন নাই। তাই এলাকার মানুষও তাকে খুব পছন্দ করেন, ভালোবাসে।