সেন্টমার্টিন ইস্যুতে সরকারের নীরবতা দাসসুলভ মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশের যৌথ উদ্যোগে ‘সংবাদপত্রের কালো দিবস উপলক্ষে’ এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপে যাওয়ার পথে মিয়ানমার থেকে গুলি করা হচ্ছে। সেখানে খাদ্য সংকট দেখা দিচ্ছে। হাজার হাজার মানুষ এখন বিপদগ্রস্ত। কিন্তু সরকার এখনো নীরব। সরকারের নতজানু নীতির কারণেই এমন হচ্ছে। বাংলাদেশকে পরনির্ভরশীল রাষ্ট্র বানিয়ে ফেলেছে বর্তমান সরকার। সীমান্তে হত্যা করলে, পানি না দিলে তারা কথা বলে না।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের দ্বীপে যেতে পারছি না। গেলে অন্য দেশ থেকে গুলি করে মেরে ফেলা হচ্ছে। অথচ এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কিছু তো করা হয়নি।
সচেতনভাবে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করছে সরকার। গণতন্ত্রের লেবাসে দেশে একদলীয় শাসন কায়েম করেছে। দেশজুড়ে নৈরাজ্য চলছে। সাবেক সেনা ও পুলিশ প্রধানের এমন দুর্নীতি-জালিয়াতি সভ্য দেশে ভাবা যায় না।
টাকা পাচার ইস্যুতে মির্জা ফখরুল বলেন, কারা দেশের টাকা পাচার করে, টাকা কোথায় যায়? সেটি সবাই মোটামুটি জানে। সাংবাদিকরাও জানে, কিন্তু তারা লিখতে পারে না। মানুষ জেনেও মুখ খুলতে পারে না। মোবাইল ব্যাংকিং প্রতি লেনদেন থেকে ৫ পয়সা করে কমিশন নেয়া হয়। সেই কমিশন দেশের বাইরে চলে যায়। কোথায় যায় সেটি আমি জানতে চাই।
তিনি আরও বলেন, এখন প্রতিদিনই পুরো জাতির জন্য কালো দিবস। বর্তমান সরকার ১৯৯৬ সালে এসেই সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ শুরু করেছে। সচেতনভাবে পরনির্ভরশীল দেশে পরিণত করছে। সাংবাদিক যারা সাহস করে কাজ করছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বেনজীর, আজিজ, আনারের ঘটনা সাংবাদিকেরাই তুলে এনেছেন।
ফখরুল বলেন, রাজনৈতিক অঙ্গনে বাম ডান সবাইকে একটা জায়গায় নিয়ে এসেছি। সাংবাদিকরাও যদি এক প্লাটফর্মে আসেন তাহলে দেশে গণতন্ত্র ফিরবে।
সভায় নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন বলেন, আগে সাংবাদিকেরা কিছু বললে মান্য করা হতো, সম্মান ছিল অনেক। এখন সেই সম্মান হারিয়ে যাচ্ছে। সবাইকে এক থাকতে হবে।
বিএফইউজের সভাপতি রহুল আমিন গাজী বলেন, আগে সবাই এই দিন কালো দিবস পালন করতো। এখন অনেকে তা সাদা দিবস বলতে চায়। একদলীয় সংসদ। ১৯৭৫ সালে যে অবস্থা ছিল, এখনো সেই অবস্থা। এখন প্রতিদিনই ১৬ জুন চলছে। ন্যায়বিচার, স্বাধীন সাংবাদিকতা ও গণতন্ত্র এখন স্বপ্নের মতো।
সভায় ধারণাপত্র পাঠ করেন বিএফইউজের একাংশের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, সাংবাদিক নেতা কবি আবদুল হাই শিকদার প্রমুখ।