ডিএমপির সাবেক পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার জাতীয় পরিচয়পত্রসহ স্পর্শকাতর তথ্য সরবরাহের অভিযোগে গাজীপুরের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) জিসানুল হককে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, জিসানুল হক (বিপি-৮৫১৪১৬৬৩৩১), অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার, সিটিএসবি অ্যান্ড প্রটেকশন বিভাগ, জিএমপি, গাজীপুর-এর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়ার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ধারা ৩৯(১) এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ১২(১) অনুযায়ী অভিযুক্তকে সরকারি চাকরি হতে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা সমীচীন মর্মে বিবেচিত হওয়ায় তাকে সরকারি সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো।
আরও বলা হয়, তিনি বাংলাদেশ সার্ভিস রুল (বি.এস.আর) পার্ট-১, বিধি-৭১ মোতাবেক খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন; এবং ০৩। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এর আগে ১৯ জুন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে জিসানুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করার সুপারিশ করে একটি চিঠি দেয় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স। এতে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
ওই চিঠিতে বলা হয়, ১২ জুন ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) থেকে জাওয়াদ নির্ঝর নামের ফেসবুক আইডিতে ডিএমপির সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াকে নিয়ে একটি পোস্ট পাওয়া যায়।
পোস্টের কমেন্ট সেকশনে জাওয়াদ নির্ঝর নামের একটি টেলিগ্রাম চ্যানেল এর লিংক উদ্ধৃত থাকে। টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রবেশ করলে ওই দিন সন্ধ্যা ৭টা ৫৬ মিনিটে ডিএমপির সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার ইএসএএফ ফর্ম সম্বলিত একটি টেলিগ্রাম পোস্ট পাওয়া যায়। এর কিউআর কোড পর্যালোচনায় ইএসএএফটি গাজীপুর মহানগর পুলিশ সদর দপ্তরের এলআইসি শাখার এনটিএমসির এনআইপি সার্ভার থেকে এএসআই মো. আরিফ হোসেনের আইডি থেকে ডাউনলোড হয়।
চিঠিতে আরও বলা হয়, জিএমপির ডিবির (দক্ষিণ) উপকমিশনার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খাঁনের দাখিল করা অনুসন্ধান প্রতিবেদনে দেখা যায় যে, জিসানুল হক তার ব্যবহৃত সরকারি মোবাইল নাম্বারের হোয়াটসঅ্যাপ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি এলআইসি শাখায় কর্মরত এসআই পরিমল চন্দ্র দাসের ব্যক্তিগত হোয়াটসঅ্যাপে আছাদুজ্জামান মিয়ার মোবাইল নম্বরের এনআইডি চেয়ে মেসেজ দেন।
এ পরিপ্রেক্ষিতে পরিমল চন্দ্র দাস সরকারি নিপ সেবা হটলাইন নম্বরে এনআইডি সরবরাহের বার্তা দেন। বার্তা পেয়ে ওই দিন রাত ৮টা ৩৯ মিনিটে এলআইসিতে ডিউটিরত এএসআই মো. আরিফ হোসেন তার নিপ আইডি থেকে ইএসএএফ ডাউনলোড করে হটলাইনের হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে এসআই পরিমল চন্দ্র দাসের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে পাঠান।
এতে বলা হয়, পরদিন পরিমল চন্দ্র দাস এটি জিসানুল হকের সরকারি মোবাইল নম্বরের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠান। উক্ত লগইন জিএমপির এলআইসিতে রক্ষিত রেজিস্টারেও পাওয়া যায়। স্পর্শকাতর তথ্য সরকারি উদ্দেশ্য ছাড়া সংগ্রহ করা অপেশাদার সুলভ আচরণ এবং শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ড হিসেবে পরিগণিত।