রবিবার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ১২:২০ অপরাহ্ন

টাইগার ব্যাটারদের ব্যর্থতায় সেমিফাইনালে আফগানিস্তান

স্পোর্টস ডেস্ক:
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০২৪
  • ২২ Time View

ল্যাংটন রুসেরের আঙুল উঠে গেছে। আফগানিস্তান খেলোয়াড়েরা ছুটছেন দিগ্বিদিক। রশিদ খানের চোখে অবিশ্বাস! মোস্তাফিজুর রিভিউ নিয়েছেন, তবে সেদিকে যেন খেয়াল নেই কারও। খেয়াল করে লাভও নেই। মোস্তাফিজ এলবিডব্লু। সেমিফাইনালে আফগানিস্তান! রহমানউল্লাহ গুরবাজ কাঁদছেন। চোটের কারণে উইকেটকিপিং থেকে অনেক আগেই উঠে গিয়েছিলেন তিনি। জোনাথন ট্রট ব্যস্ত নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে!

আফগানিস্তান, আফগানিস্তান! ডিএলএস পদ্ধতিতে বাংলাদেশকে ৮ রানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে চলে গেছে তারা। বাংলাদেশের বিদায় নিশ্চিত হয়েছে আগেই। তাদের হারে সেমিফাইনালের আগেই ছিটকে গেল অস্ট্রেলিয়াও। আগামী ২৭ তারিখ ভোরে প্রথম সেমিফাইনালে ত্রিনিদাদে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে আফগানিস্তান। বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে!

বাংলাদেশ ৭৩ বলে ১১৬ রান করতে পারলেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল চলে যেত। বাংলাদেশ আজ জয় পেলে লাভ হতো অস্ট্রেলিয়ার। তারা রান রেটে এগিয়ে থেকে সেমিফাইনালে যেত।

কিন্তু টাইগারদের পরাজয়ে ভাগ্য প্রসন্ন হলো আফগানদের। বিদায় নিল অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশ।

মঙ্গলবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংস্টনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটের শেষ ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১১৫ রান করে আফগানিস্তান।

১ উইকেট ৮০ রান করে ভালো পজিশনেই ছিল আফগানরা। এরপর রিশাদ হোসেনের লেগ স্পিন আর মোস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদের গতির মুখে পরে মাত্র ১২ বলে ৯ রান তুলতেই আফগানরা হারায় ৪ উইকেট। টপাটপ উইকেট পতনের কারণে শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১১৫ রানের বেশি করতে পারেনি আফগানরা।

আফগানিস্তানের হয়ে ৫৫ বলে তিন চার আর এক ছক্কায় সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেন ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ। ইনিংসের একিবারে শেষ দিকে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ১০ বলে তিন ছক্কায় ১৯ রান করে অপরাজিত থাকেন রশিদ খান। এছাড়া ২৯ বলে ১৮ রান করেন ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান।

বাংলাদেশ দলের হয়ে ৪ ওভারে ২৬ রানে ৩ উইকেট নেন লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। একটি করে উইকেট নেন তাসকিন ও মোস্তাফিজ।

আফগানদের ১১৫ রানে থামানোর পর বাংলাদেশের সামনে সেমিফাইনালে ওঠার সমীকরণ ছিল এমন-বাংলাদেশ যদি ১২.১ ওভারের মধ্যে জয় পায় তাহলে সরাসরি সেমিফাইনালে চলে যাবে।

অথবা সেমিফাইনালে যাওয়ার জন্য অবশ্য ১২.৫ ওভারে এই রান টপকালেও চলবে বাংলাদেশকে। সে ক্ষেত্রে স্কোর সমান হওয়ার পর একটি ছয় মারতে হবে। অর্থাৎ ১২.৫ ওভারে বাংলাদেশকে করতে হবে ১২১ রান। আবার ১২.৩ ওভারে আফগানিস্তানকে টপকাতে পারলেও সেমিফাইনালে যাবে বাংলাদেশ। সে ক্ষেত্রে ১২.৩ ওভারে করতে হবে ১১৯ রান।

আর আফগানিস্তান যদি কোনো মতো জয় পায় তাহলে তারা সেমিফাইনালে চলে যাবে। কিন্তু বাংলাদেশ যদি কোনো মতো জয় পায় তাহলে বাংলাদেশ ও আফগানদের হতাশ করে সেমিফাইনালে চলে যাবে অস্ট্রেলিয়া।

৭৩ বলে ১১৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নামার আগেই শুরু হয় বৃষ্টি। বৃষ্টির কারণে আফগানিস্তানের ইনিংস শেষে বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে নামতে একটু বিলম্ব হয়। এরপর মাঠে নেমে প্রথম ওভারে ১৩ রান করে বাংলাদেশ।

দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে ফজলহক ফারুকির বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে ব্যাটিংয়ে নেমে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ইনিংস শুরু করা শান্ত এক বল পর বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন।

নাভিন উল হকের করা তৃতীয় বলে শান্ত আউট হওয়ার পর ব্যাটিংয়ে নেমেই উইকেটের উপর ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও। পরপর দুই বলে দুই উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে যায় বাংলাদেশ।

৩.৩ ওভারে বাংলাদেশর সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেটে ৩১ রান। এরপর স্থানীয় সময় ১১.১৫ মিনিটে শুরু হয় বৃষ্টি। যে কারণে খেলা বন্ধ থাকে। ২৮ মিনিট পর ফের খেলা শুরু হয়। বৃষ্টির পর খেলা শুরু হলে ১০ বলে মাত্র ১০ রান করে ঘামতে ঘামতেই সাজঘরে ফিরেন সৌম্য সরকার।

৬.৩ ওভারে সৌম্য যখন আউট হন বাংলাদেশের সংগ্রহ তখন মাত্র ৪৮ রান। ৭৩ বলে ১১৬ রানের লক্ষ্য থাকায় রানের চাপ ক্রমেই বাড়ছিল। যে কারণে ব্যাটিংয়ে নেমেই আক্রমণাত্মক মুডে ছিলেন তাওহিদ হৃদয়। সেটি করতে গিয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন তরুণ এই ব্যাটসম্যান।

তাওহিদ প্রতিটি বলেই বাউন্ডারি হাঁকাতে চেষ্টা করে যান। মাত্র ৯ বল খেলে ১৪ রান করে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন তাওহিদ। তার আউট নিয়ে হতাশ নয় টিম ম্যানেজমেন্ট। তার মধ্যে যে রান করার তারণা ছিল তাতেই খুশি টাইগার সমর্থকরা।

দলের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে রান পাননি সাবেক অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। তিনি ৯ বলে মাত্র ৬ রান করে ফেরেন। নতুন ব্যাটস্যামন হিসেবে ব্যাটিংয়ে নেমেই আউট হন রিশাদ হোসেন।

১১.৪ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৭ উইকেটে ৮২ রান। তখন ফের বৃষ্টি শুরু হয়। ৭ মিনিট পর খেলা যখন ফের শুরু হয় তখন ম্যাচের দৈর্ঘ ১ ওভারে কমে যায়। বাংলাদেশের নতুন লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৯ ওভারে ১১৪ রান। তার মানে ৬ বলে রান কমল মাত্র ২ রান।

১১৪ বলে ১১৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করে যাচ্ছিলেন লিটন কুমার দাস। তাকে সঙ্গ দিতে নেমে ১৪.২ ওভারে দলীয় ৯২ রানে ফেরেন পেস বোলার তানজিম হাসান সাকিব।

ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিলে ওপেনিংয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে উইকেটের এক প্রান্ত আগলে রাখেন লিটন কুমার দাস। তিনি ৪১ বলে ৫টি চার আর এক ছক্কায় ফিফটি পূর্ণ করার পর লেজের ব্যাটসম্যানরা সেভাবে সঙ্গ দিতে না পারায় দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁঁছাতে পারেননি লিটন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2020 trinomulkhobor.com
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin