পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের আনন্দ হাউজিং সোসাইটির বাগান বাড়িটি জব্দ (ক্রোক) করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
শনিবার (৬ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আদালতের নির্দেশে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও জেলা দুদকের সমন্বয়ে গঠিত টিম রূপগঞ্জের আনন্দ হাউজিং সোসাইটি এলাকায় অবস্থিত বাড়িটি জব্দ করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকের নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের উপ-পরিচলাক মঈনুল হাসান রওশনী জানান, বাড়িটি ক্রোকের সময় নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক, স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ছাড়াও দুদকের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আদালতের আদেশানুসারে বাড়িটিতে সাইনবোর্ড টানিয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি সাঁটানো হবে।
জানা যায়, বেনজীর আহমেদ প্রায় আট বছর আগে এলাকার পরলোকগত প্রেমানন্দ সরকারের সন্তানদের থেকে ১ কোটি ৮৩ লাখ টাকায় ওই জায়গাটি কিনে নেন। ২০২২ সালে এই জমিতে বাড়ি করেন তিনি। বেনজীর মাঝে মধ্যেই এ বাড়িতে আসতেন, রাত্রিযাপনও করতেন। সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় বাড়িটিতে কেয়ারটেকারের পাশাপাশি দু’টি কুকুরও রাখা হয়েছে।
এর আগে গোপালগঞ্জে বিশাল এলাকাজুড়ে রিসোর্ট, রাজধানীর গুলশানে ১০ হাজার বর্গফুটের ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাট (চারটি ফ্ল্যাট একসাথে), বান্দরবানে ২৫ একর বাগানবাড়িতে রিসিভার নিয়োগ দিয়ে বেনজীরের সম্পত্তি তত্ত্বাবধানে নেয় প্রশাসন।
দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১২ জুন আদালত তৃতীয় দফায় বেনজীরের আরো বিপুল সম্পদ জব্দ করেছেন। ওই তালিকায় নারায়ণগঞ্জে এ বাগানবাড়িটিও রয়েছে। এরপর বাড়িটি দেখভালের জন্য জেলা প্রশাসককে রিসিভার নিয়োগ দেন আদালত। বাগানবাড়িটির মূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা।
উল্লেখ্য, গত ৩১ মার্চ ‘বেনজীরের ঘরে আলাদিনের চেরাগ’ এবং ৩ এপ্রিল ‘বনের জমিতে বেনজীরের রিসোর্ট’ শিরোনামে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠে আসে। অভিযোগ যাচাই-বাছাই শেষে গত ১৮ এপ্রিল অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। অনুসন্ধান শুরু হলে গত মে মাসের প্রথম সপ্তাহে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দেশত্যাগ করেন বেনজীর।