ধামইরহাটে রাস্তা নিয়ে বিরোধের জেরে বন্ধ করা হয়েছে চলাচলের পথ। এতে তিন মাস ধরে গৃহবন্দি এক পরিবার। জরুরি প্রয়োজনে তাদের বাড়ির পেছনের পুকুর সাঁতরে বা কলাগাছের ভেলায় গন্তবে যেতে হচ্ছে। ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ দিলেও সমাধান হয়নি। বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী এন্তাজ আলী। ঘটনাটি উপজেলার খেলনা ইউনিয়নের উদয়শ্রী গ্রামে।
সাইফুল ইসলামের স্ত্রী মোর্শেদা খাতুন বলেন, কাজ শেষ করে কখনও রাত ১০টা, আবার কখনও ১২টার দিকে পুকুর সাঁতরে আমার স্বামী বাড়ি ফেরেন, যা অমানবিক। গ্রামবাসীও এই অন্যায়ের ন্যায়বিচার চান।
উদয়শ্রী গ্রামে সরকারি খাসজমিতে বসবাস করছে ৩০ থেকে ৪০ পরিবার। পরিষদের পক্ষ থেকে তাদের চলাচলের সুবিধায় রাস্তা করে দেওয়া হয়। গেল রমজান মাসে সেই রাস্তা নিয়ে এন্তাজ আলীর সঙ্গে বিরোধের শুরু। এর জের ধরে প্রতিপক্ষ আব্দুল কাইয়ুম ও আব্দুল হাইয়ের সমর্থকরা এন্তাজ আলীর বাড়ি থেকে বের হওয়ার দু’দিকের রাস্তায় বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে দেয়। নিরুপায় এন্তাজ আলী বাড়ির সামনের পুকুরে সাঁতরে, কখনওবা কলাগাছের ভেলায় করে যাওয়া-আসা করেন। প্রতিপক্ষ এন্তাজ আলীর পরিবারকে গৃহবন্দি করেই ক্ষান্ত হয়নি, তারা গত ২১ জুন হামলায় চালিয়ে এন্তাজ আলীর স্ত্রী মতিজান বিবিকে বেধড়ক মারধর করে বাঁ হাটু ভেঙে দেয়। স্থানীয়রা মতিজান বিবিকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। হামলাকারীরা ভুক্তভোগী পরিবারের ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে ধান বিক্রির ১ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।
মারধরের কথা স্বীকার করে আজাহার আলীর ছেলে আব্দুল কাইয়ুম বলেন, টাকা চুরির অভিযোগ সঠিক নয়। আর রাস্তাটি মেম্বার-চেয়ারম্যানের নির্দেশেই বন্ধ করা হয়েছে।
রাস্তা বন্ধের বিষয়ে আব্দুল হাইয়ের ছেলে সামিউল বলেন, রাস্তা নিয়ে দু’পক্ষে বিরোধ শুরু হয়। মীমাংসার উদ্যোগ নিলে কেউ কাউকে না মানায় চেয়ারম্যান-মেম্বারের নির্দেশেই রাস্তাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
খেলনা ইউপি চেয়ারম্যান আলহিল মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সরকারি এ জমিতে বসবাসকারীদের চলাচলের সুবিধার্থে পরিষদ থেকে কর্মসৃজন কর্মসূচির মাধ্যমে রাস্তা করে দেওয়া হয়। আমরা কারও রাস্তা বন্ধের নির্দেশ দিইনি। তারা নিজেরাই এ কাজ করেছে। এ ছাড়া বিষয়টি নিয়ে মামলা চলছে। আদালতেই বিষয়টি সমাধান হবে।