গ্রীষ্মের প্রখর তাপদাহ কাটিয়ে প্রকৃতিকে শীতল ও সজীব করতে এসেছে বর্ষাকাল। কখনো থেমে থেমে আবার কখনো একটানা মুষলধারে চলছে ভারি বর্ষণ। তবুও বর্ষার বারিধারায় থেমে নেই জনজীবন। কর্মস্থল অথবা নিত্য প্রয়োজনে ঘরের বাইরে যাওয়ার একমাত্র অবলম্বন হলো ছাতা । আর সেই ছাতায় যদি হয় ফুটো কিংবা ব্যবহার অযোগ্য ঠিক তখনই বাঁধে বিপত্তি।
আর এই বিপত্তির কবল থেকে পরিত্রাণ পেতে ছুঁটে যেতে হয় ছাতা কেরামতকারীদের কাছে।
সারা বছর তেমন একটা কাজ না থাকলেও বর্ষায় যেন আশীর্বাদ বয়ে নিয়ে আসে ছাতা কারিগরদের। কারণ, বর্ষা এলেই তাদের কদর বেড়ে যায়। বছরের অন্য সময়ে ছাতা মেরামতের কাজ না থাকলেও বর্ষা মৌসুমে পুরোদমে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তারা। গত কয়েকদিনে টানা বর্ষণের কারণে বগুড়ার শাজাহানপুরে ছাতা কারিগরদের ব্যস্ততা বেড়েছে।
কাজের ফাঁকে কথা হয় দুবলাগাড়ী হাটে বসা শহিদুল ইসলামের সাথে। তিনি বলেন, আগের মতো আর কাজ নেই। বৃষ্টি হলে একটু কাজের ব্যস্ততা বাড়ে। দিনে ১০-১৫ টি করে ছাতা মেরামত করা যায়। এতে ৫০০-৬০০ টাকা আয় হয়। বছরের অন্য সময় কাজ না থাকায় শুধু বর্ষা মৌসুমে ছাতা মেরামতের কাজ করি। আর বাকি সময় ব্যাটারি চালিত ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি।
তিনি আরো বলেন। আমি ২৫ বছর যাবত এই পেশার সাথে জড়িত। পূর্বে আমার দুই পুরুষ এই কাজ করে গেছে। কিন্তু আমার সন্তানরা এই পেশায় আসতে চান না। কেননা এটি একটি মৌসুম ভিত্তিক কাজ। ছাতা মেরামত বছরের অন্যান্য সময় থাকে না। তাছাড়াও দাম কম হওয়ায় ছাতা নষ্ট হয়ে গেলে অনেকেই আর মেরামতও করেন না। নতুন ছাতা কিনে নেন। তাই দিন দিন এই পেশার কারিগররা হারিয়ে যাচ্ছে।
পূর্বে কাঠের হাতলওয়ালা মজবুত ও শক্তপোক্ত ছাতার প্রচলন ছিলো। যা সহজে নষ্ট হতো না। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে গেছে সেই কাঠের হাতলওয়ালা ছাতা গুলো।
এ জন্য কাঠের ছাতা তৈরীর কারিগরদের চলছে দুর্দিন। তাই অনেকেই এই পেশা ছেড়ে চলে যাচ্ছে অন্য পেশায়।