জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিলে হামলা করেছে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
আজ সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকায় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেলের নেতৃত্বে এ হামলা করা হয়।
সন্ধ্যা সাড়ে আটটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত হামলায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীর আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে ২০ জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদেরকে সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের চিকিৎসক রেজওয়ানুর রহমান বলেন, রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ২০ জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদেরকে সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সারা দেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ ও কোটা সংস্কারের একদফা দাবিতে ওই বিক্ষোভ মিছিল বের করেছিলেন শিক্ষার্থীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে মিছিল বের করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি কয়েকটি সড়ক ঘুরে ছাত্রছাত্রীদের ১৩টি হলের সামনে দিয়ে বটতলা এলাকায় পৌঁছালে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামানের (সোহেল) নেতৃত্বে দেশি অস্ত্র নিয়ে হামলা করা হয়। এ সময় নারী শিক্ষার্থীদের শ্লীলতাহানি করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সন্ধ্যায় আন্দোলনকারীরা শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামানের নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী বটতলা এলাকায় দেশি অস্ত্র নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা করে। এ সময় নারী শিক্ষার্থীদের শ্লীলতাহানি করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারধর করে ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে কয়েকজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহফুজ ইসলাম (মেঘ), বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আব্দুর রশিদ (জিতু), যুগান্তর পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মোসাদ্দেকুর রহমান, শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন প্রমুখ।
আহত সাংবাদিক মোসাদ্দেকুর রহমান বলেন, তিনি পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলেন। এ সময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে।
রাত ৮ টা ২৫ মিনিটে আন্দোলনকারীরা ধাওয়া দিলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ঢুকে যায়। এ সময় হলের ছাদ থেকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ইট–পাটকেল ছুঁড়তে থাকে। অন্যদিকে হলের সামনে অবস্থান নিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তারা ছাত্রলীগকে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দিচ্ছেন।