সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা আজ সোমবার দুপুরে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন।
আন্দোলনকারীদের অবমাননা করা হয়েছে দাবি করে গতকাল রোববার মধ্যরাতে প্রায় দুই ঘণ্টা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এর ধারাবাহিকতায় আজ দুপুরে তাঁরা আবার বিক্ষোভ ডেকেছেন।
অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অপমান করার প্রতিবাদে আজ বেলা তিনটায় অবস্থান কর্মসূচির ডাক দিয়েছে ছাত্রলীগ।
ঘোষণা অনুযায়ী, দুটি কর্মসূচিই হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে।
চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন থেকে আসা বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় গতকাল রাত ১০টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে মধ্যরাতে শিক্ষার্থীরা জড়ো হন টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে। রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হয়ে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী নানা স্লোগান দেন। সেখানে নারী শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। জমায়েতে শিক্ষার্থীরা ‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’, ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’সহ নানা স্লোগান দেন।
সাম্প্রতিক চীন সফর নিয়ে গতকাল বিকেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কোটাবিরোধী আন্দোলন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিরা পাবে না? তাহলে কি রাজাকারের নাতি-পুতিরা চাকরি পাবে?’
কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন থেকে আসা বক্তব্য আজ দুপুর ১২টার মধ্যে প্রত্যাহার না করলে তাঁরা আন্দোলনে নামবেন।
গতকাল রাতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভকে ঘিরে ছাত্রলীগের একটি অংশ মধুর ক্যানটিনে অবস্থান নিয়েছিল। ছাত্রলীগের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার নেতা-কর্মীরা মোটরসাইকেলে করে লাঠিসোঁটা নিয়ে মধ্যরাত থেকে জড়ো হন শাহবাগ এলাকায়। ছাত্রলীগ ছাড়াও আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরাও সেখানে ছিলেন। ক্যাম্পাসের আশপাশে তাঁদের দেখা গেলেও তাঁরা কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘাতে জড়াননি। কিন্তু সরকার-সমর্থক সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীদের এমন অবস্থানে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। রাতে শাহবাগে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের একটি অংশও বিক্ষোভ করেন।