সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২১ অপরাহ্ন

ঢাবিতে নিপীড়নবিরোধী শিক্ষক সমাবেশ

নিউজ ডেস্ক:
  • Update Time : সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০২৪
  • ৩৬ Time View

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীসহ দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যুর ঘটনাকে ‘জুলাই হত্যাকাণ্ড’ নামে ডাকার আহ্বান জানিয়েছেন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষক। গণগ্রেপ্তারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হয়রানি বন্ধসহ আটক শিক্ষার্থীদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

আজ সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার সামনে ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষক সমাবেশ’ হয়। এ সমাবেশে অংশ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক নামের সংগঠনের শিক্ষকেরা এসব দাবি জানান। তাঁরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিটি দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।

সমাবেশের শুরুতে আন্দোলন ঘিরে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রতিপক্ষ ভাবা হচ্ছে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের খোলনলচে পাল্টে দিতে এসেছেন। স্বাধীনতার পর থেকে গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও রাষ্ট্রে যে লাগাতার নৈরাজ্য চলেছে, হলগুলোয় যে সুপরিকল্পিত নিপীড়ন চলেছে ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের—সেই সবকিছু পাল্টে নতুন ইতিহাস লেখার পথ তৈরি করেছেন এই শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের প্রতিটি দাবির প্রতি তাঁরা সমর্থন জানান। আন্দোলন ঘিরে দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যুর ঘটনাকে ‘জুলাই হত্যাকাণ্ড’ নামে ডাকার আহ্বান জানান তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন বলেন, ‘ব্লক রেইড’ দিয়ে শিক্ষার্থীদের ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এটা জেনেও যদি প্রতিবাদ না করা হয়, সেটি হবে অন্যায়। গণমাধ্যমে শুধু একটি দিকের বিবরণ (ন্যারেটিভ) প্রচার করা হচ্ছে যে দেশের সম্পদ নষ্ট হচ্ছে। কিন্তু জানতে হবে, আসল সম্পদ হচ্ছে মানুষ। যখন ছাত্রছাত্রীদের ওপর গুলি করা হয়, ধরে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন কোনো শিক্ষক ঘরে বসে থাকতে পারেন না। এই নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে।

সমাবেশে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক আবদুল হাসিব চৌধুরী বলেন, ১৯৬৯ সালে অধ্যাপক শামসুজ্জোহা ছাত্রদের রক্ষা করতে গিয়ে শহীদ হয়েছিলেন। এখানে যাঁরা (শিক্ষক) জমায়েত হয়েছেন, তাঁরা শহীদ শামসুজ্জোহার উত্তরসূরি। আর শিক্ষার্থীরা যে অধিকারের জন্য, যে বৈষম্যহীনতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন, লড়াই করছেন, তাঁরা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরসূরি।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক নাসির উদ্দিন আহমদ বলেন, অযথা মিথ্যা মামলা দিয়ে ঘর থেকে শিক্ষার্থীদের ধরে আনা হচ্ছে। সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দিন। বাচ্চাদের পড়ালেখায় ফিরে আসতে দিন। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফিরে আসুন। স্বৈরতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় থেকে দেশের উন্নয়ন তো দূরের কথা, দেশের মানুষের কাছেও কোনো দিন পৌঁছানো যাবে না।

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক রুশাদ ফরিদী, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস ডিসিপ্লিনের শিক্ষক আব্দুল্লাহ হারুন চৌধুরী, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক সাইমুম রেজা তালুকদার প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সমাবেশ শেষে শিক্ষকেরা মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের জমায়েতস্থল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের সামনে যান। সেখান থেকে তাঁরা আবার অপরাজেয় বাংলায় ফিরে আসেন। সমাবেশ শুরুর আগে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে জড়ো হন শিক্ষকেরা। পরে সেখান থেকে অপরাজেয় বাংলার সামনে আসেন তাঁরা।

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2020 trinomulkhobor.com
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin